গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পৌরসভা কর্তৃক ভুয়া ওয়ারিশন সনদ প্রদানের মাধ্যমে কৌশলে নামজারী সম্পন্ন করে ভোগ দখলে থাকা জায়গা মালিক আব্দুল হক মিয়া সহ পুরো পরিবারকে উৎখাতের পায়তারা চালাচ্ছে একটি কু-চক্রী মহল। সাম্প্রতিক সময়ে পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড সিকির বাজার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আঃ হক মিয়া বাদী হয়ে এ্যাসিল্যান্ড প্রতিক দত্ত, উপ-সহকারী তহসীলদার প্রদীপ কুমার বিশ্বাস এবং পৌর সচিব পিযুষ কান্তি বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ বিভাগীয় কমিশনার ও দুর্নিতী দমন কমিশন সেগুন বাগিচা ঢাকা বরাবর গত ৭ ই জুলাই ২০২৫ ইং তারিখে ডাকযোগে প্রেরণ করেন। যাহার রেজিঃ রশিদ নং- ০০১ এবং ০০২।
অভিযোগ সূত্রে যানা যায় আঃ হক মিয়া ৫৫ নং বলুহার মৌজার এসএ-২২ নং খতিয়ানের ৩৯৮, ৪০০,৪২২,৪২৩,৪২৪ নং দাগের ৭৯.৫০ শতাংশ জায়গা জমি নজির হোসেন এবং মনোহর বেপারীর নিকট হইতে ক্রয় করিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগ দখল করিয়া আসিতেছেন।
উক্ত জায়গাজমির মধ্যে ৫৮ শতাংশ ভূমি ভিপি গেজেট ভূক্ত না হওয়া সত্তেও সদর তহসীল অফিস কর্তৃক অন্যত্র লীজ দেওয়ার পরিকল্পনা করলে ভুক্তভোগী বিধি মোতাবেক নামজারীর জন্য আবেদন জানায়। যাহার মামলা নং- বি-৫০৫/২০২৩-২০২৪।
উক্ত মামালা চলমান থাকার বিষয়টি গোপন রেখে উপ-সহকারী তহসীলদার প্রদীপ বিশ্বাসের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্ত বদলী জনিত কারনে চলে যাওয়ার পূর্বে তড়িঘড়ি করে ভুয়া ওয়ারিশন সনদের মাধ্যমে মৃতঃ কালীপদ বাড়ৈর ছেলে সুধীর বাড়ৈ ও মাধব বাড়ৈ নামক দুই সহোদরের নামে ৯৮০৪-২০২৪/২৫ নং মামলা মূলে নামজারী পত্তন প্রদান করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ভুক্তভোগী আব্দুল হক মিয়া সাংবাদিকদের জানান আমার জমি দাতা নজির হোসেন ও মনোহর বেপারীর সাথে মাধব ও সুধীরের ওয়ারিশ মূলে কোন সম্পর্ক নাই, এ্যাসিল্যান্ড প্রতিক দত্ত অপূর্ব দাস ও পিযুষ কান্তির সাথে যোগসাজসে রাতের আধারে অর্থের বিনিময়ে ভুয়া ওয়ারিশন সনদ প্রদানের মাধ্যমে নামজারী প্রদান করেন যে কারনে আমার পুরো পরিবার আজ হুমকীর মুখে।আমি সরকারের কাছে এই ঘটনার তদন্ত পূর্বক সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
শতবর্ষী আব্দুল কাদের মিয়া সত্তরর্ধো বীর মুক্তিযোদ্ধা মোদাচ্ছের হোসেন ঠাকুর,সাবেক শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র বাড়ৈ সহ একাধিক এলাকাবাসী বলেন-গোপাল বাড়ৈ,খগেন বাড়ৈ,অশ্বীনি বাড়ৈ (অম্বিকা) এবং মনোহর বেপারীর সাথে কালীপদ,সুধীর,মাধব বাড়ৈর ওয়ারিশ মূলে কোন সম্পর্ক নাই,থাকতে পারে না, তাদের বিষয়ে যদি কেহ ওয়ারিশন সনদ দিয়ে থাকেন তাহা ভুল বে-আইনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অপুর্ব দাস জানান- কাগজপত্র সঠিক থাকলে আব্দুল হক মিয়া আদালতে যাক জায়গা জমি ফেরৎ পাবে।সুধীর বাড়ৈ বলেন আমরা পৈত্রিক সূত্রে ওয়ারিশ মূলে জায়গা পেয়েছি,কিছু জায়গা অপূর্ব, বিশ্বজিৎ ও মিলন হাজরার কাছে বিক্রি কারা হয়েছে।পৌর সচিব পিযুষ কান্তি বিশ্বস জানান প্রদেয় ওয়ারিশন সনদ বাতিলের লক্ষে আমি আব্দুল হককে পৌর প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করতে বলেছি।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী তহশীলদার প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন ওয়ারিশন সনদ অনুযায়ী প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে,মামলা চলমান আছে কিনা তাহা আমার জানা ছিলনা আমার সিনিয়র তহশীলদার রকিব উদ্দিন সব জানেন,অর্থ লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ন ভিত্তিহীন বানোয়াট।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুম বিল্লাহ বলেন- উক্ত ভুয়া ওয়ারিশন সনদের মাধ্যমে পাওয়া সমস্ত নামজারী মামলা বাতিল করা হয়েছে।